ব্লগিং কি? কিভাবে ব্লগিং শুরু করবেন? blogging tutorial

 ব্লগিং কি? কিভাবে ব্লগিং শুরু করবেন? blogging tutorial


অনলাইনে আয়ের অন্যতম সেরা জনপ্রিয় একটি ক্ষেত্র হচ্ছে ব্লগিং, একটি ওয়েবসাইট হতে পারে আপনার সারা জীবনের স্থায়ী উপার্জনের ক্ষেত্র ব্লগিং করে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার আয় করছেন বিশ্বের সেরা প্রফেশনাল ব্লগাররা, তাহলে আপনি পারবেন না কেন? অবশ্যই পারবেন! তবে এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই হতে হবে একজন প্রফেশনাল ব্লগার,

 

ব্লগিং কি? কিভাবে ব্লগিং শুরু করবেন? blogging tutorial

আমি যখন ব্লগিং শুরু করি তখন অনেক সমস্যায় পরেছিলাম যে, কি কি শিখবো, কিভাবে শিখবো, কোথায় শিখবো ইত্যাদি,,, গাইডলাইন দেওয়ার মতো কেউ ছিলোনা, শেষ পর্যন্ত অনেক সময় এবং পরিশ্রম করে শিখতে পেরেছি, তাই আপনারা যারা ব্লগিং করতে চান বা শিখতে চান যাতে কোনো অসুবিধায় না পরে সঠিক ভাবে শিখতে পারেন সে জন্য আমি ব্লগিং সম্পর্কে একদম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকল তথ্য তুলে ধরেছি আজকের এই টিউটোরিয়ালে, আপনি যদি মনোযোগ সহকারে পুরো লেখাটি পড়েন তাহলে আশা করছি ব্লগিং সম্পর্কে আপনার আর কোনো কিছুই অজানা থাকবে না।

 

ব্লগিং কি?

 

ব্লগ হচ্ছে এক ধরনের অনলাইন ব্যক্তিগত দিনলিপি বা ব্যক্তি কেন্দ্রিক পত্রিকা নিজের জ্ঞান, শিক্ষামূলক কথা, জানা অজানা ঘটনা, টিপস এন্ড টিউটোরিয়াল সহ নানান বিষয়াবলী সম্পর্কে সঠিক তথ্য সাজিয়ে গুছিয়ে লিখে অনলাইনের একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যেমে পৃথিবির সকল মানুষের সামনে তুলে ধরাকেই ব্লগিং বলে, আর যে এই কাজ করে তাকে ব্লগার বলে।

 

আপনি যদি ব্লগিং করতে চান বা ব্লগার হতে চান তাহলে সবার প্রথম আপনাকে একটি বিষয় বেচে নিতে হবে যেমনঃ টেকনোলোজি, খেলাধুলা, পড়ালেখা, ইসলামিক, সাস্থ্য বিষয়ক ইত্যাদি, তারপর সেই বিষয়ে ভালো ভাবে জানতে হবে বুঝতে হবে এবং সাজিয়ে গুছিয়ে আর্টিকেল লিখতে হবে, আপনি যখন ভালো মানের আর্টিকেল লিখতে পারবেন তখন যে বিষয়ে আর্টিকেল লিখছেন সেই সম্পর্কিত নাম চয়েজ করে একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট খুলতে হবে।

 

এবং আপনার লিখা আর্টিকেল সেই ওয়েবসাইটে পোস্ট করতে হবে, যখন আপনার ব্লগে -১০ টা পোস্ট করা হবে তখন আপনার ব্লগে ভিজিটর আনার জন্য সেই ওয়েবসাইটি কে গুগল সার্চ ইঞ্জিনে অপটিমাইজ করতে হবে যাতে করে বাংলাদেশ সহ বিশ্বের যেকোনো দেশের মানুষ যেকোন সময় যেকোনো জায়গা থেকে গুগলে সার্চ করে আপনার ওয়েবসাইটটি কে খুঁজে পায় এবং আপনার লিখা আর্টিকেল দেখতে এবং পড়তে পারে।

 

যখন আপনার ব্লগের বয়স - মাস হবে এবং মোটামুটি ভালো ভিজিটর আসবে তখন গুগল এডসেন্স এর জন্য এপ্লাই করবেন এডসেন্স এপ্রোভ হওয়ার পর আপনার সাইটে / জায়গায় এড দেখাবে এবং ইনকাম শুরু হয়ে যাবে, তাছাড়া স্পন্সারশীপ এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করেও ব্লগ থেকে আয় করা যায়।

 

এতক্ষন আপনাদের সাথে ব্লগিং সম্পর্কে প্রাথমিক আলোচনা করা হয়েছে, এখন আপনাদের জানবো ব্লগিং শুরু করতে হলে কি কি শিখতে হবে এবং কিভাবে শিখবেন তার বিস্তারিত টিউটোরিয়াল।

 

কিভাবে ব্লগিং শুরু করবেন?

 

ব্লগি হচ্ছে একটি মাল্টি টাস্কিং ওয়ার্ক, এটা এমন কিছু নয় যে আসলেন করলেন আর কোটিপতি হয়ে গেলেন, আপনি যদি অনলাইনে ব্লগিং করতে চান তাহলে আপনাকে কম করে হলেও মাস সময় দিতে হবে এবং প্রচুর হার্ড ওয়ার্ক করতে হবে। কিভাবে ব্লগিং শুরু করবেন বা ব্লগিং শিখতে হলে কি কি জানতে হবে এই সকল বিষয়াবলী ধাপে ধাপে জানতে বা শিখতে হবে, যদিও একটি আর্টিকেলে ব্লগিংয়ের সকল বিষয়াবলী বুঝানো সম্ভব নয় তারপর আমি একটা ছোট ওভারভিউ দিচ্ছি।

 

কনটেন্ট রাইটিং করা

 

সবার প্রথমে আপনাকে কনটেন্ট রাইটিং করা শিখতে হবে, আপনি শিক্ষা, সাস্থ্য, খেলাধুলা, বিনোধন, তথ্য প্রযুক্তি অথবা আপনার যদি অন্য কোনো বিষয়ে পুর্ব অভিজ্ঞতা থেকে তাকে তাহলে সেই বিষয়ে কনটেন্ট রাইটিং করতে হবে, কন্টেন্ট রাইটিং করার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে আপনার লেখা আর্টিকেল যেনো কোনো বানান ভুল না থাকে।

 

ব্লগ তৈরি করা

 

যখন আপনি মুটামুটি ভাবে আর্টিকেল রাইটিং করাটা শিখে যাবেন তখন আপনার নিজের অথবা আপনি যে বিষয়ে আর্টিকেল লিখেছেন সেই বিষয়ের নামে একটা ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে, ওয়েবসাইট তৈরি বা বানানোর দুটি মাধ্যম আছে ফ্রি এবং পেইড, আপনি যদি ওয়েবসাইট বানানোর জন্য টাকা খরচ করতে চান তাহলে আপনাকে ডোমেন হোস্টিং কিনে ওয়ার্ডপ্রেসের সাহায্যে একটি ওয়েবসাইট বানাতে হবে, আর যদি ওয়েবসাইট বানাতে কোনো টাকা খরচ করতে না চান তাহলে ব্লগারের সাহায্যে খুব সহজেই বিনামূল্যে একটি ওয়েবসাই বানাতে পারবেন, তবে আমি মনে করি প্রথম অবস্থায় ফ্রি ওয়েবসাইট বানিয়ে কাজ শুরু করাই ভালো, পরবর্তীতে আপনি চাইলে যেকোনো সময় এই ফ্রি ওয়েব সাইট কে পেইডে কনভার্ট করতে পারবেন।

 

ব্লগ ডিজাইন ম্যানেজ করা

 

ব্লগ তৈরি করার পর আপনার প্রথম কাজ হচ্ছে সেই ব্লগের সুন্দর একটা ডিজাইন করা এর জন্য আপনার ব্লগে থিম আপলোড করতে হবে যাতে আপনার ব্লগটি দেখতে সুন্দর দেখা যায়, আপনি এখান থেকে বিনামূল্যে যত খুশি তত থিম ডাউনলোড করতে পারবেন। ডিজাইন করা হয়ে গেলে আপনি আপনার ব্লগে পোস্ট পাবলিশ করা শুরু করে দিতে পারবেন, তারপর আপনার সেই ব্লগটাকে ম্যানেজ করার জন্য ব্লগের বিভিন্ন সেটিংস সম্পর্কে ধারনা নিতে হবে।

 

ব্লগ Seo করা

 

ব্লগ খোলা, ডিজাইন করা এবং কিছু পোষ্ট বা টিউটোরিয়াল পাবলিশ করার পর আপনার ব্লগটাকে গুগল সার্চ কনসোল এ যুক্ত করতে হবে মানে এসইও করতে হবে, পুরোপুরি এসইও করা হলে সাধারণ ভিজিটর গুগলে সার্চ করে আপনার ওয়েবসাইট টি খুজে পাবে এবং আস্তে আস্তে আপনার ব্লগটি জনপ্রিয় হবে।

 

কি কি উপায়ে আয় করা যায়?

 

ব্লগিং করে ইনকাম করার অনেক গুলো মাধ্যেম বা উপায় আছে যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে মনিটাইজ এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, একটি ব্লগের মৌলিক ইনকাম সোর্স হচ্ছে মনিটাইজেশন আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট টি যখন গুগল এডসেন্স অথবা অন্য কোনো এড নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে মনিটাইজ করেবেন তখন আপনার ব্লগে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন শো করবে এবং প্যাসিভ ইনকাম আসতে থাকবে।

 

 

 

দ্বিতীয়ত হচ্ছে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, আপনি অ্যামাজন আলী এক্সপ্রেস অথবা অন্য কোনো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং নেটওয়ার্কে জয়েন করে সেই কোম্পানির পোডাক্ট এর রিভিউ লিখে আপনার ব্লগে একটি আর্টিকেল পাবলিশ করবেন এবং সেখানে আপনার অ্যাফিলিয়েট লিংক টি যুক্ত করে দিবেন পরবর্তীতে যারা আপনার এই টিউটোরিয়াল দেখবেন তাদের মধ্যে কেউ যদি আপনার জেনারেট করা অ্যাফিলিয়েট লিংকে ক্লিক করে কোনো পোডাক্ট কিনে তাহলে আপনি সেই পোডাক্টের দামের ৫-১০% কমিশন পাবেন। এছাড়াও ব্লগিং এর মাধ্যমে ইনকাম করার আরো কিছু উপায় রয়েছে যেমন স্পনসরশিপ, আর্টিকেল রাইটিং সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজড ইত্যাদি,

 

আপনি যদি পুরোপুরি ভাবে ব্লগিং শিখতে পারেন এবং মনোযোগ দিয়ে কাজ করেন তাহলে আশা করা যায় আপনিও ব্লগিং এর মাধ্যমে ৫-৬ টি উপায়ে ইনকাম করতে পারবেন।

 

 ব্লগিং করে কত আয় হবে?

 

গত কয়েকদিন আগে কিছু সংখ্যক সফল ব্লগারদের মধ্য জরিপ চালানো হয়েছিলো যেখানে দেখা গেছে ১০০ ব্লগারের মধ্য ১০ জন ব্লগারের মাসিক আয় ৩০০ থেকে ৯০০ ডলার, ২০% ব্লগারের মাসিক আয় ১০০ থেকে ৫০০ ডলার, ৩০% ব্লগারের মাসিক আয় ১০০ থেকে ৩০০ ডলার, আর বাকি ৪০% ব্লগারের মাসিক আয় ৫০ থেকে ১৫০ ডলার।

 

ব্লগিং করে আয়ের নির্ধারিত কোনো সংখ্যা নেই কারন একটি ব্লগে আপনি যত বেশি সময় দিয়ে কাজ করবেন যত বেশি আর্টিকেল লিখবেন ততটাই বেশি ভিজিটর আপনার ব্লগে আসবে আর আপনার ব্লগে যত বেশি ভিজিটর আসবে আপানার ইনকাম তত বাড়বে।

 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন

Comments system